মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০২০

অবরুদ্ধ সময়ে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার কিছু উপলব্ধি ও কিছু সুপারিশ


১. পাঁচ বছর পূর্বে (মে ২৪, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ) পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস পৃথিবীর যত্ন ও পরিবেশের উপর একটি সর্বজনীন পত্র লিখেছেন। পত্রটির শিরোনাম 'লাউডাটো সি' (Laudato Si)  এবং বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে 'তোমার প্রশংসা হোক'; যা বিশ্বের সকল মানুষের প্রতি প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় জেগে ওঠার একটি আহ্বান। পোপ মহোদয়ের অনুপ্রেরণামূলক এবং চ্যালেঞ্জপূর্ণ লেখাটি বিশ্বের মানুষকে প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশীদের বিষয়ে ভাবতে প্রেরণা যুগিয়েছে। সর্বজনীন পত্রটি প্রকাশের পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে পোপ মহোদয় 'লাউডাটো সি সপ্তাহ' (মে ১৬-২৪, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ) পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। এই আহ্বানের আসল উদ্দেশ্য হলো এই অভিন্ন বসতবাটির যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করার  জন্য যেন নিজেরা কিছু কিছু উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এ অবরুদ্ধ সময়ে নিজের অবস্থানে থেকে প্রকৃতি ও পরিবেশের সুরক্ষার জন্য দায়িত্বশীল আচরণ করার মাধ্যমে অর্থপূর্ণভাবে সপ্তাহটি উদযাপন  করতে পারি।

২. এ বছরের শুরুতে ‘ন্যায় ও শান্তি কমিশন-বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী’র ‘জলবায়ু সুরক্ষা দপ্তর’ এর উদ্যোগে 'আমরা সবুজ, আমরা সুন্দর : WE ARE GREEN, WE ARE CLEAN' মূলমন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন ধর্মপল্লীর গ্রাম, পাড়া বা মহল্লায় প্রকৃতি ও পরিবেশের মাঝে প্রার্থনা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, বায়ু-জল-শব্দদূষণ নিরোধ, প্লাস্টিক ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শাক-সবজি বাগান, বৃক্ষরোপণ, বসতবাটি সংলগ্ন জলাশয় নর্দমামুক্তকরণ, স্বাস্থ্যসম্মত মলনিষ্কাশন ব্যবস্থা বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অনেক এলাকায় খ্রিস্টভক্তগণ গুরুত্বের সহিত কর্মসূচি গ্রহণ করতে শুরু করেছে কিন্তু করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বিস্তাররোধে লকডাউনের কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে। নিজেদের সুস্থ পরিবেশের কথা চিন্তা করে গ্রামভিত্তিক, স্কুলভিত্তিক, পাড়াভিত্তিক বা মহল্লাভিত্তিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে পারি। এই অবরুদ্ধ সময়ে ব্যক্তিগতভাবে ও পারিবারিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি।

৩. পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন- ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্মের যত্ন নেওয়া ও তা লালন ক’রে সৎ ও ধার্মিক জীবন যাপন করাই হচ্ছে আমাদের আহ্বানের মূল বিষয়; এটি আমাদের খ্রিস্টীয় জীবনের কোন ঐচ্ছিক বা আনুষঙ্গিক বিষয় নয় (লাউডাটো সি - ২১৭)। সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য বিষয়ভিত্তিক পড়ার অভ্যাস প্রয়োজন, তাতে বিষয় সম্পর্কে গভীর মনোযোগ দেয়া যায়। পোপ মহোদয়ের সাথে লাউডাটো সি চেতনায় একাত্মতা প্রকাশ করার জন্য নিজেদের উদ্যোগ অর্থপূর্ণ করার জন্য অনুপ্রেরণামূলক পত্রটি পাঠ করতে পারি। পোপ মহোদয় কর্তৃক রচিত বাংলা অনুবাদের ১১৬ পৃষ্টার ৬টি অধ্যায়ের ২৪৬ পদ বিশিষ্ট পত্রটি শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও খুব সংক্ষেপে ৪ পাতায় সারমর্ম তুলে ধরেছেন। বিশপ মহোদয়ের লেখাটি পড়তে পারি; যা অনলাইনে বরেন্দ্র দূত, বিডি খ্রিস্টান নিউজ (BDChristianNews) এবং প্রত্যাশা ব্লগে (litonhgomes.blogspot. com)  ন্যায় ও শান্তি কলামে পাওয়া যাবে। 

৪. পোপ ফ্রান্সিস স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন- মানুষ প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশীদের প্রতি অনেক ক্ষতি করে চলেছে। পোপ মহোদয় আরও বলেছেন- ‘পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে মনপরিবর্তন’ অপরিহার্য, যাতে চতুর্দিকের জগতের সাথে মানুষের সম্পর্ক সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। সুতরাং মনপরিবর্তন প্রক্রিয়ায় ৬টি ধাপ অনুসরণ করতে পারি। যেমন- প্রথম ধাপ- ধীর স্থির অন্তরে সৃষ্টির মাঝে সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি উপলব্ধি করি; দ্বিতীয় ধাপ- অপরূপ প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা করি; তৃতীয় ধাপ- ক্ষতবিক্ষত ধরিত্রীর ও বিপদাপন্ন দরিদ্র মানুষজন অবিরত কাঁদছে তা অন্তরে শুনি; চতুর্থ ধাপ- অনুতপ্ত হৃদয়ে আমরা স্বীকার করি- আমরা মানুষই প্রতিবেশ বা পরিবেশ বিপর্যয়ের মূল কারণ; পঞ্চম ধাপ- তাঁর আহ্বান অন্তরে শুনি এবং সুনির্দিষ্ট কিছু কিছু পদক্ষেপ ও উদ্যোগ গ্রহণ করি; ষষ্ঠ ধাপ- একটি সুন্দর মনে সৃষ্টিকর্তার নিকট নিরন্তর প্রার্থনা করি, পত্রটির সমাপ্তির অংশে অর্থপূর্ণ দুইটি প্রার্থনা প্রস্তুত করা আছে।

৫. আমাদের অভিন্ন বসতবাটির প্রতি যত্নবান ও রক্ষণাবেক্ষণ তাগিদ অনুভব করার জন্য মৌলিক কিছু উপাদান নিয়ে গভীর মনোযোগসহ অনুধ্যান করতে পারি। যেমন- (ক) ভূমি বা মাটি, (খ) বায়ু বা বাতাস, (গ) আগুন এবং (ঘ) জল ইত্যাদি। এসব আমাদের জীবনযাপনে অপরিহার্য উপাদান, এসব ছাড়া জীবন বাঁচতে পারে না। প্রকৃতি ও পরিবেশ শুধু একটি বিচ্ছিন্ন বিষয় নয় বরং একটি সমন্বিত পরিবেশ যেখানে আছে প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নৈতিক বিষয়। এখানে শুধু মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করলে হবে না; বরং বনের জীব-জন্তু, আকাশের পাখি-পঙ্গপাল, বাতাসে উড়ে বেড়ানো মশা-মাছির মত প্রাণীকুল, ভূমির পোকা-মাকর ও সরিসৃপ, নদী ও জলাভূমির মাছ, সমুদ্রের সকল জীবের কল্যানের বিষয়ও ভাবতে হবে। ঈশ্বর তো এদেরও সৃষ্টি করেছেন, প্রকৃতিতে এদের একটি করে ভূমিকা দেওয়া আছে। 

৬. এই অবরুদ্ধ সময়ে প্রতিদিন পারিবারিক রোজারিমালা প্রার্থনার সময় প্রতিটি নিগূঢ়রহস্য ধ্যান করার পূর্বে একজন কিছু সময় পরিবেশ সুরক্ষায় করণীয় বিষয়সমূহ সহভাগিতা করতে পারি। যেমন- করোনভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের পদক্ষেপসমূহ। পুণ্যপিতা পোপ মহোদয়ের সাথে একাত্ম হয়ে মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি কয়েকটি কর্মকাণ্ড গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সব বিষয় নিয়েও সহভাগিতা করা যায় যেমন:  (ক) পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা- নিজের দেহ থেকে শুরু করে পোশাক-আশাক, ঘরবাড়ী, রাস্তাঘাট, কর্মস্থল, সমাবেশস্থল, প্রভৃতির পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা; (খ) অপচয়রোধ- প্রয়োজন অতিরিক্ত খরচপাতি, জিনিসপত্র ও দ্রব্যসামগ্রীর অপব্যবহার, ভোজনবিলাস ও ভোগের মানসিকতা বর্জন; (গ) দূষণমুক্ত পরিবেশ- শব্দ, বায়ূ ও জল - সকল প্রকার দূষণমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা; (ঘ) স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ- প্রকৃতিজাত, বিশুদ্ধ ও সুষম খাদ্য আহার ও পানীয় পান করা। পবিত্র বাইবেলে স্বর্গদূতের মুখে সংবাদ শুনে  মারীয়া যেমন এলিজাবেথকে সেবাযত্ন করতে দ্রুত ছুটে গেলেন, পিতরের শাশুড়ি ও মার্থা-মারীয়া যেমন পরিবারে সেবারত ছিলেন এবং ক্ষুদ্র নারীদলটি যেমন সমাধিগুহায় যিশুর দেহে সুগন্ধি সামগ্রী লেপন দিয়ে নিজেদের যত্নবান ও রক্ষণাবেক্ষণের দিকটি প্রকাশ করেছেন; আমরাও তাদের মত অন্তর নিয়ে পরিবার ও পরিবেশের প্রতি আরও বেশি যত্নবান ও রক্ষাণাবেক্ষণ করতে পারি। প্রার্থনা সময় সহভাগিতার আলোকে খাবারের সময় আলোচনা করে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে পারি।

৭. যিশু প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকতেন বলেই আমাদেরও সৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আহ্বান করেছেন। পরিবেশ সুরক্ষায় শিশু-কিশোরদের অবদানও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ইতোমধ্যে সতের বছর বয়সী জলবায়ুকর্মী সুইডেনের গ্রেটা থানবার্গ এর নাম শুনেছি, সে পরিবেশ সুরক্ষায় বিশ্বজুড়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে । এই অবরুদ্ধ সময়ে শিশুরা প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশীদের বিভিন্ন বিষয়ে সুন্দর সুন্দর ছবি অংকণ করতে পারে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধু ও আত্মী-স্বজনের সাথে শেয়ার করতে পারে। বাছাইকৃত ছবিসমূহ অবরুদ্ধ সময় অতিক্রান্ত হলে বাঁধাই করে রাখা যায়। করোনাভাইরাস মহামারী সময়ে অনেক যুবসংগঠন মানবসেবায় অংশগ্রহণ করেছে, যুবকরা পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়েও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। পোপ মহোদয়ের সাথে একাত্ম হয়ে প্রত্যেক ডাইওসিসের বিশপ মহোদয় অবশ্যই ভক্তজনগণের উদ্দেশ্যে 'লাউডাটো সি সপ্তাহ' উদযাপন করার সুনির্দিষ্ট কয়েকটি কর্মকাণ্ড গ্রহণের আহ্বান করেছেন। বিশপ মেহোদয়ের আহ্বানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাণ্ডলিক দায়িত্ব।

৮. দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগাতে আগ্রহ বৃদ্ধি করা যায় কারণ গাছগুলি কার্বনডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং প্রচুর ছায়া দিয়ে থাকে। দেশীয় প্রজাতির গাছ বেড়ে উঠতে কম জল প্রয়োজন হয়, গাছগুলো আরও শক্ত হয় এবং এগুলো স্থানীয় বন্যজীবকে আকর্ষণ করে। এসব গাছ স্থানীয় আবহাওয়া পরিস্থিতিতে সহায়ক এবং এগুলো মাটির ক্ষয়রোধসহ বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস করে। বাড়ির আশেপাশে খালি জায়গা সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। সুতরাং দেশীয় গাছ ও ঘাস লাগানো যত বেশি পরিমান বাড়ানো যায় ততই উপকার পাওয়া যাবে। বৃষ্টিপ্রধান অঞ্চলের বন-জঙ্গল বাঁচাতে বন্যজীবনের চামড়া থেকে তৈরি পণ্যগুলি বর্জন করা দরকার। বৃষ্টিপ্রধান অঞ্চলের বন-জঙ্গল সমৃদ্ধ দেশগুলি থেকে আমদানীকৃত কাঠের পণ্যগুলি কিনতে গিয়ে পণ্যসমূহ পরিবেশ-বান্ধব সরবরাহকারীদের মাধ্যমে এসেছে তা নিশ্চিত হওয়া দরকার ।

৯. নিজ বাড়িতেই সার তৈরি ও ব্যবহার করলে ফলাফল উত্তম হবে। রান্নাঘরের অবশিষ্টাংশ, পাতা-লতা ও আবর্জনাগুলি মিশ্রিত করে উত্তম সার তৈরি করা যায় এবং এসব গাছের বৃদ্ধি জন্য আরও ভাল সার হিসেবে সহায়তা করে। সার তৈরি সম্পর্কে  বই বা বিভিন্ন লেখা পড়া যেতে পারে। এ বিষয়ে নিজ এলাকায় অত্যন্ত দক্ষ কাউকে পাওয়া গেলে পরামর্শ নেয়া যায়। মনে রাখতে হবে- মাটি একটি জীবন্ত উপাদান, এটি পাউডারযুক্ত এবং মারা উচিত নয়। জীবন মাটি থেকে আসে এবং তাই মাটি বাঁচিয়ে রাখা উচিত। সুতরাং মাটি বায়ুযুক্ত রাখতে খুব আক্রমণাত্মক বিষয়সমূহ এড়িয়ে চলা দরকার। 

১০. সঠিক হতো যদি প্লাস্টিকের অস্তিত্ব না থাকত এবং আমাদের পুনর্ব্যবহার করার প্রয়োজন না হত। যেহেতু আমরা এমুহূর্তে তা বাদ দিতে পারছি না তাই সঠিকভাবে ব্যবহার করার দিকে গুরুত্ব দিতে পারি। যারা ইতোমধ্যে সঠিকভাবে পুনর্র্ব্যবহার করছে তাদের অভিজ্ঞতা শুনতে ও প্রয়োগ করতে পারি। আবর্জনা হিসেবে প্লাস্টিক বর্জ্য সঠিক ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বতন্ত্রভাবে মোড়ানো ক্যান্ডি প্লাস্টিক ব্যবহার করে থাকে এবং প্রচুর আবর্জনা তৈরি করে যা মাটিকে নষ্ট করে ফেলে। তাই কোন পণ্য কেনার আগে প্লাস্টিক মোড়কের কথা ভাবা যেতে পারে, এসব পরিবেশকে বহুমাত্রিক এবং ক্রমবর্ধমানভাবে নষ্ট করছে।   

১১. পোষা প্রাণীটিকে যখন আর প্রতিপাল করতে ইচ্ছা হবে না তখন এদের উন্মুক্তভাবে ছেড়ে দেয়া দায়িত্বশীল আচরণ নয়। এতে প্রাণীটি স্থানীয় পরিবেশে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বন থেকে সংগ্রহ করা বিদেশী পোষা প্রাণী কিনতে যাওয়ার আগে ভাবতে হবে। পোষা প্রাণীর দোকানে প্রাণীটি  'বন্য-সংরক্ষিত' বা 'গৃহ-প্রজনন' এবিষয়ে তথ্য নিশ্চিতকরণ দায়িত্বশীল আচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে। 'গৃহ-প্রজনন'  প্রাণী পরিবেশের জন্য আরও বন্ধুত্বপূর্ণ। পোষা প্রাণী কেনার আগে নিজের আগ্রহ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে  যে এটির যত্ন নিতে আমি প্রস্তুত। পোষা প্রাণী প্রতিপালনে যত্নবান ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

১২. প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশীদের ক্ষতির ধরন ও বিভিন্নতা বহুমাত্রিক এবং ক্রমবর্ধমান। এখন সুনির্দিষ্টভাবে কাজ শুরু করার একটা সমন্বিত রূপরেখা দরকার। স্থানীয় পরিবেশ সুরক্ষা সংগঠনে যোগদান করে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা যায়। পরিবেশ সংরক্ষণ কর্মীদের অর্থায়ন করাও একটি ভালকাজ। নিজের কল্যাণে কথা ভেবেই প্রকৃতি, পরিবেশ এবং প্রতিবেশী সুরক্ষা সুসংবাদটি আপন পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়দের জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র একটি আহ্বান। ইতোমধ্যে অনেকে নীরবে কাজ করে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করেছে। অর্জনসমূহ সমবেতভাবে সহভাগিতা করে এগিয়ে যাওয়াটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সত্যিকার অর্থেই ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক গণ্ডি ত্যাগ করে সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত ভাবে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য একসাথে কাজ করা অধিকতর কল্যাণ হবে। অন্যথায় আরও মাশুল দিতে হবে আগে না হোক অদূর ভবিষ্যতে। পোপ মহোদয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশীদের সুরক্ষায় 'লাউডাটো সি সপ্তাহে' আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ মহান কিছু অর্জন সম্ভব হবে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন