রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

ধরিত্রীর বুকে নতুন ছন্দ, নতুন আশা

সৃষ্টির জন্য বিশ্ব প্রার্থনা দিবস  (১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ)

 ভূমিকা: পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস এর আহ্বানে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় লাউদাতো সি বর্ষের শুরুতে খ্রিস্টমণ্ডলী “সৃষ্টি উদযাপন কাল” পালনে অংশ নিতে আমাদের আহ্বান করছেন। এ বছরের মূলভাব হিসেবে ‘ধরিত্রীর জয়ন্তী : নতুন ছন্দ, নতুন আশা’ গ্রহণ করা হয়েছে। “সৃষ্টি উদযাপন কাল” বিশ্বজুড়ে ১ সেপ্টেম্বর - ‘সৃষ্টির জন্য বিশ্ব প্রার্থনা দিবস’ থেকে ৪ অক্টোবর - আসিসির সাধু ফ্রান্সিস এর পর্ব দিবস পর্যন্ত পালন করা হয়। সৃষ্টি উদযাপন কালের একটি বিশিষ্ট আন্তঃমাণ্ডলিক মাত্রা ও প্রেরণা বিদ্যমান রয়েছে। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে বিশ্বের সকলে একত্রে আমাদের অভিন্ন বসতবাটির যত্ন ও সুরক্ষার জন্য একটি মাস প্রার্থনা ও বাস্তব কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এ সময়ে খ্রিস্টিয় সকল চার্চের নেতাগণ বিশ্ববাসীকে ধরিত্রীর সুরক্ষার জন্য একত্রে প্রার্থনা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং  অ্যাডভোকেসি কর্মসূচিতে অংশ নিতে অনুরোধ করে একটি বিশেষ আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আসুন,  বিগত বছরের ঐতিহ্য অনুসরণ করে আমরা এই উপলক্ষটি যথাযথ মর্যাদা নিয়ে পালন করি এবং নিজেদের বিশ্বাসের গভীরতার অভিব্যক্তি হিসাবে আমাদের অভিন্ন বসতবাটির যত্ন ও সুরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করি।

পুনর্মিলন অনুধ্যান  

১. সৃষ্টি উদ্যাপন কাল আমাদের ভেঙ্গে ফেলা বন্ধন নিরাময় করার জন্য আহ্বান করছে।  বিশ্ব যেমন করোনাভাইরাস মহামারীটির একটি জরুরী অবস্থার মাঝে গভীর অনিশ্চয়তা ও দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়েও একত্রে সত্যিকার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পুনরুদ্ধার করার জন্য সমস্তকিছু সংযুক্ত করছে; অর্থাৎ আমাদের যে বন্ধনগুলি ভেঙে ফেলেছি তা নিরাময় করতে চেষ্টা করছি। আগের চেয়ে বেশি বুঝতে পেরেছি আমরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন না; অন্যদিকে অভিজ্ঞতা করেছি মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা কতটা ভঙ্গুর। সৃষ্টির এই বিশেষ কালে আমাদের ধরিত্রীর পুনর্নবীকরণ এবং আমাদের মূল্যবান দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে সুযোগ করে দিয়েছে। 

২. আমরা অন্তরে গভীরভাবে উপলব্ধি করি- আবর্জনা এখানে-সেখানে ছুড়ে ফেলে অপরিচ্ছন্ন-অস্বাস্থ্যকর নর্দমা তৈরি করেছি; গাছ কেটেছি কিন্তু রোপনে অবহেলা করে পরিবেশে ভারসাম্য নষ্ট করেছি; স্বার্থপরতা ও অতিভোগের কারণে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, পানিদূষণ করে ফেলেছি; প্রতিনিয়ত প্রচুর পানি অপচয় করছি, খাল ও নদীর জল বিষাক্ত করে ফেলেছি; এভাবে প্রকৃতি ও প্রতিবেশীদের প্রতি অনেক ক্ষতি  ইতোমধ্যে করেছি। আসুন, এসব স্মরণ করে অনুতপ্ত হই ও মন-পরিবর্তন করি  এবং প্রকৃতি ও  প্রতিবেশীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলি। 

গান: (প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রসংশামূলক)

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ: আদিপুস্তক ২: ৪-৯, ১৫  অথবা

লাউদাতো সি থেকে পাঠ

১. পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন- “আমাদের অভিন্ন বসতবাটিকে রক্ষা করার জন্য জরুরি চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গোটা মানব-পরিবারকে একত্রিত করার চিন্তাভাবনা, যাতে টেকসই ও সম্পূরিত উন্নয়ন সাধিত হয়, কেননা আমরা জানি যে, পরিবর্তন সম্ভব” (লাউদাতো সি-১৩)। 

২. তিনি আহ্বান করছেন- “আমাদের প্রিয় গ্রহটির ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নিয়ে নতুন ক’রে একটি সংলাপের প্রয়োজন অনুভব করছি যে-সংলাপে সকলেই অংশগ্রহণ করতে পারে, কেননা পরিবেশগত যে চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে সেই চ্যালেঞ্জ, এবং তাঁর মানবিক কারণসমূহ আমাদের সকলকেই ভাবিয়ে তুলছে এবং আমরা সবাই ভুক্তভোগী” (লাউদাতো সি-১৪)। 


ব্যক্তিগত অনুধ্যান

১. আমরা একটু চিন্তা করি ও অন্তরে উপলব্ধি করি- সৃষ্টির আর্তনাদ আমাকে কি বলছে? 

২. এই মুর্হূতে পরিবেশগত সংকটের মাঝে আমার বর্তমান অবস্থা কিরূপ মনে হয়? 

৩. আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের নিকট অর্থাৎ আমাদের যেসব সন্তান এখন বেড়ে উঠছে তাদের জন্য আমরা কেমন  

     ধরিত্রী  রেখে যেতে চাই? 

৪. আমি কি কি পদক্ষেপ নিয়ে ভঙ্গুর পরিবেশে নতুন ছন্দ, নতুন আশা অনুসন্ধান করছি বা করতে পারি?  


সহভাগিতা: (সময় অনুযায়ী ৩/৪জন প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার নিজস্ব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপসমূহ সহভাগিতা করা যায়)


সমাপ্তি প্রার্থনা: (পোপ ফ্রান্সিস এর ‘আমাদের ধরিত্রীর জন্য প্রার্থনা’)



(“সৃষ্টি উদযাপন কাল” উপলক্ষে লাউদাতো সি অনুসরণে প্রার্থনা প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবার, লাউদাতো সি বাগান, স্কুল/ কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোস্টেল, সেমিনারী, ফাদার-ব্রাদার সিস্টারদের কনভেন্ট, সংগঠন, ক্রেডিট ইউনিয়ন, প্রতিষ্ঠান এবং দলগতভাবে প্রকৃতির তীর্থযাত্রার সময় প্রার্থনাসমূহ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।) 

বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ডিডি

রাজশাহীর বিশপ ও  চেয়ারম্যান, ন্যায় ও শান্তি কমিশন-সিবিসিবি

ফা. লিটন হিউবার্ট গমেজ  সিএসসি

সেক্রেটারি, ন্যায় ও শান্তি কমিশন-সিবিসিবি

#০১৭১১ ৯৮ ৩৪ ৯৭




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন