রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

ধরিত্রীর বুকে নতুন ছন্দ, নতুন আশা

সৃষ্টির জন্য বিশ্ব প্রার্থনা দিবস  (১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ)

 ভূমিকা: পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস এর আহ্বানে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় লাউদাতো সি বর্ষের শুরুতে খ্রিস্টমণ্ডলী “সৃষ্টি উদযাপন কাল” পালনে অংশ নিতে আমাদের আহ্বান করছেন। এ বছরের মূলভাব হিসেবে ‘ধরিত্রীর জয়ন্তী : নতুন ছন্দ, নতুন আশা’ গ্রহণ করা হয়েছে। “সৃষ্টি উদযাপন কাল” বিশ্বজুড়ে ১ সেপ্টেম্বর - ‘সৃষ্টির জন্য বিশ্ব প্রার্থনা দিবস’ থেকে ৪ অক্টোবর - আসিসির সাধু ফ্রান্সিস এর পর্ব দিবস পর্যন্ত পালন করা হয়। সৃষ্টি উদযাপন কালের একটি বিশিষ্ট আন্তঃমাণ্ডলিক মাত্রা ও প্রেরণা বিদ্যমান রয়েছে। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে বিশ্বের সকলে একত্রে আমাদের অভিন্ন বসতবাটির যত্ন ও সুরক্ষার জন্য একটি মাস প্রার্থনা ও বাস্তব কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এ সময়ে খ্রিস্টিয় সকল চার্চের নেতাগণ বিশ্ববাসীকে ধরিত্রীর সুরক্ষার জন্য একত্রে প্রার্থনা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং  অ্যাডভোকেসি কর্মসূচিতে অংশ নিতে অনুরোধ করে একটি বিশেষ আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আসুন,  বিগত বছরের ঐতিহ্য অনুসরণ করে আমরা এই উপলক্ষটি যথাযথ মর্যাদা নিয়ে পালন করি এবং নিজেদের বিশ্বাসের গভীরতার অভিব্যক্তি হিসাবে আমাদের অভিন্ন বসতবাটির যত্ন ও সুরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করি।

পুনর্মিলন অনুধ্যান  

১. সৃষ্টি উদ্যাপন কাল আমাদের ভেঙ্গে ফেলা বন্ধন নিরাময় করার জন্য আহ্বান করছে।  বিশ্ব যেমন করোনাভাইরাস মহামারীটির একটি জরুরী অবস্থার মাঝে গভীর অনিশ্চয়তা ও দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়েও একত্রে সত্যিকার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পুনরুদ্ধার করার জন্য সমস্তকিছু সংযুক্ত করছে; অর্থাৎ আমাদের যে বন্ধনগুলি ভেঙে ফেলেছি তা নিরাময় করতে চেষ্টা করছি। আগের চেয়ে বেশি বুঝতে পেরেছি আমরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন না; অন্যদিকে অভিজ্ঞতা করেছি মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা কতটা ভঙ্গুর। সৃষ্টির এই বিশেষ কালে আমাদের ধরিত্রীর পুনর্নবীকরণ এবং আমাদের মূল্যবান দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে সুযোগ করে দিয়েছে। 

২. আমরা অন্তরে গভীরভাবে উপলব্ধি করি- আবর্জনা এখানে-সেখানে ছুড়ে ফেলে অপরিচ্ছন্ন-অস্বাস্থ্যকর নর্দমা তৈরি করেছি; গাছ কেটেছি কিন্তু রোপনে অবহেলা করে পরিবেশে ভারসাম্য নষ্ট করেছি; স্বার্থপরতা ও অতিভোগের কারণে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, পানিদূষণ করে ফেলেছি; প্রতিনিয়ত প্রচুর পানি অপচয় করছি, খাল ও নদীর জল বিষাক্ত করে ফেলেছি; এভাবে প্রকৃতি ও প্রতিবেশীদের প্রতি অনেক ক্ষতি  ইতোমধ্যে করেছি। আসুন, এসব স্মরণ করে অনুতপ্ত হই ও মন-পরিবর্তন করি  এবং প্রকৃতি ও  প্রতিবেশীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলি। 

গান: (প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রসংশামূলক)

পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ: আদিপুস্তক ২: ৪-৯, ১৫  অথবা

লাউদাতো সি থেকে পাঠ

১. পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন- “আমাদের অভিন্ন বসতবাটিকে রক্ষা করার জন্য জরুরি চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গোটা মানব-পরিবারকে একত্রিত করার চিন্তাভাবনা, যাতে টেকসই ও সম্পূরিত উন্নয়ন সাধিত হয়, কেননা আমরা জানি যে, পরিবর্তন সম্ভব” (লাউদাতো সি-১৩)। 

২. তিনি আহ্বান করছেন- “আমাদের প্রিয় গ্রহটির ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নিয়ে নতুন ক’রে একটি সংলাপের প্রয়োজন অনুভব করছি যে-সংলাপে সকলেই অংশগ্রহণ করতে পারে, কেননা পরিবেশগত যে চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে সেই চ্যালেঞ্জ, এবং তাঁর মানবিক কারণসমূহ আমাদের সকলকেই ভাবিয়ে তুলছে এবং আমরা সবাই ভুক্তভোগী” (লাউদাতো সি-১৪)। 


ব্যক্তিগত অনুধ্যান

১. আমরা একটু চিন্তা করি ও অন্তরে উপলব্ধি করি- সৃষ্টির আর্তনাদ আমাকে কি বলছে? 

২. এই মুর্হূতে পরিবেশগত সংকটের মাঝে আমার বর্তমান অবস্থা কিরূপ মনে হয়? 

৩. আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের নিকট অর্থাৎ আমাদের যেসব সন্তান এখন বেড়ে উঠছে তাদের জন্য আমরা কেমন  

     ধরিত্রী  রেখে যেতে চাই? 

৪. আমি কি কি পদক্ষেপ নিয়ে ভঙ্গুর পরিবেশে নতুন ছন্দ, নতুন আশা অনুসন্ধান করছি বা করতে পারি?  


সহভাগিতা: (সময় অনুযায়ী ৩/৪জন প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার নিজস্ব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপসমূহ সহভাগিতা করা যায়)


সমাপ্তি প্রার্থনা: (পোপ ফ্রান্সিস এর ‘আমাদের ধরিত্রীর জন্য প্রার্থনা’)



(“সৃষ্টি উদযাপন কাল” উপলক্ষে লাউদাতো সি অনুসরণে প্রার্থনা প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবার, লাউদাতো সি বাগান, স্কুল/ কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোস্টেল, সেমিনারী, ফাদার-ব্রাদার সিস্টারদের কনভেন্ট, সংগঠন, ক্রেডিট ইউনিয়ন, প্রতিষ্ঠান এবং দলগতভাবে প্রকৃতির তীর্থযাত্রার সময় প্রার্থনাসমূহ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।) 

বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ডিডি

রাজশাহীর বিশপ ও  চেয়ারম্যান, ন্যায় ও শান্তি কমিশন-সিবিসিবি

ফা. লিটন হিউবার্ট গমেজ  সিএসসি

সেক্রেটারি, ন্যায় ও শান্তি কমিশন-সিবিসিবি

#০১৭১১ ৯৮ ৩৪ ৯৭




শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০

The Season of Creation is nearly here! সৃষ্টি উদযাপন কাল


Your Eminence /Excellency/Rev. Fathers/ Rev. Sisters/Rev. Brothers/Respected Leaders,

Warm greetings from EC-JP, CBCB!  The Season of Creation is nearly here!

Together next month, Christians on six continents and our country will kick off the annual celebration with transformational events. Join us.

World Day of Prayer for the Care of Creation

1 September, 2020

&

Daily Prayer and Action for Season of Creation

1 September -4 October, 2020

v  The Event inauguration by Most Rev. Bishop Gervas Rozario, DD, President, EC-JP, CBCB

v  Prayers at Religious Houses/Seminaries

v  Prayer at Caritas/World Vision/Credit Union/ECs Offices

v  Publication: WEEKLY PROTIBESHI (7-13 September)

v  Reflections, Articles and Events Sharing using social media

v  National Webinar with Christian Faith Leaders

v  Small Group Sharing/Discussion/Seminars/Creation Pilgrimage-“Connecting Everyone to Nature through Prayer” at Laudato Si Garden

v  Join us with Personal prayer using Blog: https://litonhgomes.blogspot.com/
While you are in outing with nature/cars/Solitude

To start the Season of Creation, join thousands of Christians as we prayerfully discern how God is calling us to re-examine our relationship with creation.

Holy Father Pope Francis is always with us in spirit.

Every day during the Season of Creation prayer, we’ll unite in solidarity and share/hear our thoughts & good works from each other about how ongoing crises are affecting our common home. We’ll also learn how we/people are rising to these challenges and building solutions together.

EC-JP-CBCB has prepared the Prayers. Kindly find the prayer files attached: 1. Prayers on the Season of Creation for Religious houses/Seminaries, and 2. Prayers on the Season of Creation for Organizations/offices.

On behalf of Most Rev. Bishop Gervas Rozario, DD, President, EC-JP, CBCB, I am sending the Prayer files.


We are united in Prayer!


Fr. Liton Hubert Gomes CSC, 

Executive Secretary,

Episcopal Commission for Justice and Peace (EC-JP), CBCB

CBCB Centre, 24/C Asad Avenue, Mohammadpur, Dhaka-1207, Bangladesh.



সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০

The Season of Creation: September 1 - October 4, 2020

Warm greetings from EC-JP, CBCBCreation is under attack. This Season of Creation - from September 1 to October 4th, 2020 - is an opportunity to wake up the world - for each of us to become beacons of hope and inspiration for a better future. Together, we have the power to ignite a bold global cry for climate justice, and there couldn’t be a more important time for that action. 

In less than a week, the world’s 2.4 billion Christians will unite to pray and take action for our common home. Millions of Christians around the globe will take action for our common home September 1 to October 4 - and your contribution is essential.

As a global Christian family, Christians on six continents will discover radically new ways to care for and to live with creation. More than listening to the cry of creation, together, we will take action. Whether your action is large or small - everything we do has a ripple effect, inspiring more and more people to action.

Respected all, here’s why your participation matters: as Pope Francis reminds us, “we can only come out of this situation together, with humanity as a whole.” Pope Francis has called us all to take part in the Season of Creation. He wants us to let “our prayer be inspired anew by closeness to nature” and to undertake “prophetic actions.” 

Respected all, creation needs you. Respond to the cry of creation and join the global Christian family as it celebrates in local Christian family the Season of Creation September 1 to October 4, 2020.

Are you ready to take the next step?         

1. Participating in the season of creation (September 1 to October 4, 2020) and encourage your friends to do same;

2. Organizing a prayer service for your community, arrange recollection; prepare homily on Laudato Si

3. Youth Commission prepared online presentation for students and youth “Connecting Youth/students to Nature,” kindly join them; educational institutions may join EC_youth_CBCB;

4.  Teaching about Laudato Si and climate change; Developing ecological catechesis, Retreats, formation, Seminars & Workshops with small groups maintaining physical distance; resources are available; Using the cycle called 3Rs (1) Read – (2) Reflect – (3) Re-act method (See-Judge-Act); EC_JP_CBCB prepare 20 lessons cover LS 6 chapters, good for seminars, workshops in new normall;

5.      Planning to celebrate in local Christian family the Season of Creation which will be celebrated on September 1 to October 4, 2020, focusing as the pastoral care of our common home;  Sharing Experiences (stories & challenges) in dealing with caring our common home;

6.      Finding and sharing the “Signs of Resurrection” experienced in the current crisis (during and post-pandemic). Many forms of concrete assistance rendered, challenges faced and strategies planned to continue the care of our common home;

7.      Planting the trees or start a community garden, Laudato Si garden; the catholic Bishops’ conference of Bangladesh announces to plant 400,000 trees and Catholic Charity Caritas Bangladesh announces to plant 300,000 trees, kindly join us.

8.       Making songs and art to celebrate Creation, participate in an online climate strike or work with your parish priest to do a Season of Creation service.

9.      Networking with partners locally and internationally;

10.  Publishing WEEKLY PROTIBESHI issue on creation on September 7-13, 2020, writing articles and reflection national newspapers and catholic newsletters.

Respected all, whether it’s attending a workshop online, taking action at home to lower your carbon footprint, or engaging your community to pray together for creation - there’s something each of us can - and must do - to bring about a better future.

Hence we request you kindly to take initiative & plan for the Season of Creation which will be celebrated on September 1 to October 4, 2020, in your Diocese, religious community, seminary, institution and parish.  

Praying for action for our common home, It’s time to live out our values. Take action and join the Season of Creation today.

May HE continue to shine on us so that we can reflect HIS image in our work and relationships.


With prayerful regards, 

Fr. Liton Hubert Gomes, CSC

Executive Secretary, EC-JP, CBCB

                For

Most Rev. Bishop Gervas Rozario, DD, 

President, EC-JP, CBCB





রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০

The 106th World Day of Migrants and Refugees 2020.

 

Warm greetings from EC-JP, CBCB! “Forced like Jesus Christ to flee” is the title chosen by His Holiness Pope Francis for the annual message for the 106th World Day of Migrants and Refugees which will be celebrated on 27 September 2020. The message will focus on the pastoral care of internally displaced people (IDPs), who currently number over 41 million worldwide. 

We have known and experienced that the COVID 19 crisis has globally impacted the entire human society.  In Asian countries the most affected are the Migrants, Refugees, the Trafficked and the Displaced Persons. However we are also witnessing that various organizations specially the local churches are extending their whole hearted care and services towards the most affected during this pandemic crisis. The post pandemic challenges are even greater, demanding deeper reflections and planned strategies to address the crisis with greater preparation at local and regional levels.

Hence EC-JP, CBCB is going to organize meetings, seminars, group discussions and mini research/data collection using social media.

Objectives:

1.      To plan the 106th World Day of Migrants and Refugees which will be celebrated on 27 September 2020, titled “Forced like Jesus Christ to flee” focusing on the pastoral care of internally displaced people (IDPs).  

2.      Finding and sharing the “Signs of Resurrection” experienced in the current crisis (during and post-pandemic). Many forms of concrete assistance rendered, challenges faced and strategies planned to continue the care of Migrants, Refugees, Displaced and the Trafficked.

3.      Sharing Experiences (stories & challenges) in dealing with Migrants, Refugees, the Displaced and the Trafficked during the pandemic.

4.      Sharing Post pandemic crisis- challenges foreseen, strategies and plans to deal with.

5.      Networking with partners national and international.

6.      Mini research/data/collection/publication-WEEKLY PROTIBESHI, 21-27 September 2020 for pastoral care of Migrants, Refugees, Displaced and the Trafficked.

Hence we request you kindly to take initiative & plan for the 106th World Day of Migrants and Refugees  day which will be celebrated on 27 September 2020, titled “Forced like Jesus Christ to flee” focusing on the pastoral care of internally displaced people (IDPs) in your Diocese, community, institution and parish.  

May HE continue to shine on us so that we can reflect HIS image in our work and relationships.

With prayerful regards,

Fr. Liton Hubert Gomes, CSC

Executive Secretary, EC-JP, CBCB

                For

Most Rev. Bishop Gervas Rozario, DD, President, EC-JP, CBCB 





বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০২০

করোনাকালে ঢাকা ছেড়েছে ১৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ -পিপিআরসি ও বিআইজিডির গবেষণা প্রতিবেদন



১. নিজস্ব প্রতিবেদক, পিপিআরসি ও বিআইজিডির গবেষণা, ঢাকা, ১৮ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, প্রথম আলো। ভাগ্যের অন্বেষণে গ্রাম থেকে শহরমুখী হয় মানুষ। আমাদের আর্থসামাজিক বাস্তবতা এটাই। কিন্তু মহামারি করোনা সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। একসময় গ্রাম থেকে একটু ভালো করে বাঁচার আশায় যারা শহরে এসেছিল, তারা আবার হয়েছে গ্রামমুখী। বেসরকারি সংগঠন পিপিআরসি ও বিআইজিডির গবেষণার তথ্য, করোনাকালে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে অন্তত ১৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা খরচ, যোগাযোগের ব্যয় এবং অন্য নানামুখী ব্যয় মেটাতে না পেরেই এসব মানুষ ঢাকা ছেড়েছে।পরিসংখ্যানে প্রকাশ করোনাকালে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে ২১.৭ শতাংশ মানুষ। সংখ্যায় তা তিন কোটি ৫৬ লাখ। পিপিআরসি ও বিআইজিডির জরিপের তথ্য বলছে, ভাগ্য অন্বেষণে প্রতিদিন যেখানে এক হাজারের মতো লোক ঢাকায় প্রবেশ করে, সেখানে করোনাকালে ঢাকায় আসার প্রবণতা একদমই নেই। কাজের সন্ধানে বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষের ঢল নেই বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামেও।

২. আজ মঙ্গলবার ১৮ আগষ্ট এক ভার্চ্যুয়াল সভায় ‘লাইভলিহুড, কোপিং অ্যান্ড রিকভারি ডিউরিং কোভিড-১৯’ শীর্ষক জরিপভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয় । পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) করোনাকালে আর্থসামাজিক অবস্থা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে। সাধারণ ছুটির পরে কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে সেটা নির্ণয়ের জন্য এই গবেষণাটি করা হয়, যার প্রতিবেদন গতকাল তুলে ধরেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান ও বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন। দুটি প্রতিষ্ঠান এর আগে গত এপ্রিলে এক জরিপের মাধ্যমে মহামারির সময়ে আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর একটি জরিপ করে। তখন লকডাউন বা সাধারণ ছুটি বলবৎ ছিল। ওই কাজের ধারাবাহিকতায় লকডাউন বা সাধারণ ছুটি তুলে দেওয়ার পর অবস্থাটা কী, তা তুলে ধরতেই ছিল আজকের আয়োজন। ২০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত চলে এ জরিপ। এতে অংশ নেয় ৭ হাজার ৬৩৮ পরিবার। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি শহরের পরিবার, ৪৩ শতাংশের বেশি গ্রামের পরিবার এবং ১ দশমিক ২২ শতাংশ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবার। এবারের জরিপে গ্রাম এবং শহরের দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষও যুক্ত ছিল।

৩. জরিপে দেখা গেছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এপ্রিল মাসে ৬ শতাংশ শহুরে দরিদ্র মানুষ শহর থেকে গ্রামে চলে যায়। জুনে এসে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। জুন মাসে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসে শহুরে দরিদ্র মানুষের আয় কমে গেছে ৪৩ শতাংশ, গ্রামের মানুষের আয় ৪১ শতাংশ আর পার্বত্য চট্টগ্রামের দরিদ্র মানুষের আয় কমেছে ২৫ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে ১৭ শতাংশ জুনে এসে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাসাবাড়িতে কাজ করত যেসব মানুষ, যাদের মধ্যে প্রায় বেশির ভাগই নারী, তাদের কাজ হারানোর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাদের সংখ্যা ৫৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। এরপর আছে অদক্ষ শ্রমিক, দক্ষ শ্রমিক। দেখা গেছে, কারখানার শ্রমিক ও কৃষিশ্রমিকদের মধ্যে কাজ হারানোর হার অপেক্ষাকৃত কম। দুই পেশাতেই ১০ শতাংশের কিছু বেশি।

৪. করোনার আগে, লকডাউনের সময় ও লকডাউন তুলে নেওয়ার পর দারিদ্র্য পরিস্থিতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয় গবেষণায়। দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিতে যেখানে শহরে খাবারে ব্যয় ছিল ৬০ টাকা, এপ্রিলে তা কমে হয় ৪৪ টাকা। জুনে এসে এটি সামান্য বাড়ে, হয় ৪৫ টাকা। শহরাঞ্চলে দরিদ্র মানুষের খাবারের ব্যয়ে কিছু উন্নতি হলেও গ্রামে পরিস্থিতি লকডাউনের পরেও ভালো হয়নি। দেখা গেছে, গ্রামে ফেব্রুয়ারিতে খাবার ব্যয় ছিল ৫২ টাকা। এপ্রিলে তা কমে হয় ৪১ টাকা, জুনে ৩৭ টাকা। আয়ের নিরিখে দেখা যায়, শহরাঞ্চলে দরিদ্র মানুষের আয় ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১০৮ টাকার বেশি। এপ্রিল তা অনেকটা কমে হয়ে যায় ২৬ টাকা, জুনে দাঁড়ায় প্রায় ৬৭ টাকায়। গ্রামাঞ্চলে আয় ফেব্রুয়ারিতে ছিল প্রায় ৯৬ টাকা। এপ্রিল ও জুনে হয় যথাক্রমে ৩৭ ও ৫৩ টাকার কিছু বেশি।

৫. লকডাউনে সব শ্রেণির মানুষের আয় কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে রিকশাচালকদের আয়। তাঁদের প্রায় ৫৪ শতাংশ আয় কমেছে। এরপর আছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পরিবহনশ্রমিক ও অদক্ষ শ্রমিক।করোনাকালে এক নতুন দরিদ্র শ্রেণি তৈরি হয়েছে। এপ্রিল মাসে তাদের সংখ্যা ছিল ২২ দশমিক ৮ শতাংশ। জুনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যখন চালু হয়ে গেছে, তখন এ সংখ্যা সামান্য কমে হয়েছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ। চরম দরিদ্র, মাঝারি দরিদ্র, ঝুঁকিতে থাকা নতুন দরিদ্র এবং নতুন দরিদ্র—সুনির্দিষ্টভাবে এই চার শ্রেণির মতামত উঠে আসে জরিপে।

৬. আজ সমীক্ষা প্রতিবেদনের একটি অংশ তুলে ধরেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন। লকডাউন বা সাধারণ ছুটি প্রত্যাহার নিয়ে চার শ্রেণির মনোভাব তুলে ধরে মতিন বলেন, সব শ্রেণির মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ মনে করে লকডাউন প্রত্যাহার না করার কোনো বিকল্প ছিল না। প্রায় ৩০ শতাংশ একে ভালো সিদ্ধান্ত বলে মনে করে। ১০ শতাংশের মতো মনে করে, এটি কিছুদিন পর করা যেত, বাকিরা কোনো মন্তব্য করেনি। সমীক্ষায় উঠে এসেছে ত্রাণ সহায়তার চিত্র। করোনাকালে অসহায় মানুষের সহায়তায় নগদ অর্থ দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠেছিল জোরেশোরে। সমীক্ষায় দেখা যায়, শহর-গ্রাম-পার্বত্য এলাকার মধ্যে শহরেই নগদ সহায়তার পরিমাণ বেশি। তাও মাত্র প্রায় ১৬ শতাংশ মানুষ এ সহায়তা পেয়েছে। গ্রামে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় ১০ শতাংশ। পরিবারপ্রতি খরচ হয়েছে ১ হাজার ৭৬৭ টাকা ৬৮ পয়সা। যদি সব দরিদ্র মানুষকে এটা দেওয়া হতো, তবে তাদের কাছে যেত শহরে মাত্র ২৭২ টাকা, গ্রামে প্রায় ৬১ টাকা।

সূত্র: বেসরকারি সংগঠন পিপিআরসি ও বিআইজিডির গবেষণার তথ্য, ১৮ আগষ্ট, প্রথম আলো, দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত



শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০

বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনীর চার লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন

এতে সকলকে কমপক্ষে একটি গাছ লাগানোর আহ্বান করা হয়েছে। বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনীর সহ-সভাপতি ও ন্যায় ও শান্তি কমিশন এর প্রেসিডেন্ট বিশপ জের্ভাস রোজারিও’র সভাপতিত্বে ১৪ আগস্ট ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ, শুক্রবার বিকাল ৫:৩০ মিনিটে ঢাকার মোহম্মদপুর সিবিসিবি সেন্টারে “চার লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির” শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকার আর্চবিশপ মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ডাইওসিসের সম্মানিত বিশপগণ, কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো রোজারিও, বিশপ সম্মিলনীর সেক্রেটারি ও ডেস্ক প্রধানগণ, বাংলাদেশের খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওসহ কিছু খ্রিষ্টান মিশনারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ। তাছাড়াও করোনাকালীন সুরক্ষা নীতিমালা অনুসরণ করে খ্রিষ্টান সমাজের বিশিষ্ট কিছু ব্যক্তি এ মহতী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক ঘোষিত ‘লাউদাতো সি’/ প্রকৃতি বর্ষ ( ২৪ মে, ২০২০ – ২৪ মে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ); জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ( ১৭ মার্চ ২০২০ – ১৭ মার্চ ২০২১ খ্রিস্টাব্দ) এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী (২৬ মার্চ ২০২১ – ২৬ মার্চ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ)  অর্থপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের কাথলিক খ্রিষ্টান সমাজ এ মহতী কাজের উদ্যোগ নিয়েছে। সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৪ লক্ষ কাথলিক খ্রিষ্টান প্রত্যেকে ১টি করে ফলজ চারা রোপণের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও বলেন, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণে এবং এই জনগণের বহুবিদ চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে বন ও বৃক্ষ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দিচ্ছে। এমনিতর অবস্থায় ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস সকলকে প্রকৃতির যথাযথ যত্ন নেবার আহ্বান জানিয়ে ৫ বছর আগে ‘লাউদাতো সি’ বা তোমার প্রশংসা হোক নামে একটি সর্বজনীন পত্র লেখেন। এর ৫ম বর্ষপূর্তিতে পোপ মহোদয় (২৪ মে, ২০২০-২৪ মে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দকে) ‘লাউদাতো সি/প্রকৃতি-পরিবেশ বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তাই পোপ মহোদয়ের প্রকৃতি-পরিবেশ- লাউদাতো সি বর্ষ ঘোষণা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে  বিশ্বজনীন মণ্ডলী ও দেশের সাথে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশ কাথলিক মণ্ডলী ৪ লাখ বৃক্ষরোপণ করার মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য আনয়নে ও দেশের উন্নয়নে কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পারবে বলে আমি আশাবাদী। প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ ঢাকার মোহাম্মদপুরের সিবিসিবি চত্ত্বরে জলপাই, সফেদা ও জাম্বুরার তিনটি চারা রোপণের মধ্য দিয়ে ৪ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর শূভ সূচনা করেন। উল্লেখ্য বৃক্ষরোপণের এ কর্মসূচিটি ২০২০-২০২১ খ্রিষ্টাব্দ সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী ও বিভিন্ন ডাইওসিস, বিভিন্ন কমিশন, স্কুল-কলেজ, যুব সংগঠন ও ক্লাব, বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। (বিজ্ঞপ্তি)

Bangladesh bishops launch tree planting program

Catholic Church leaders in Bangladesh led a tree planting activity in Dhaka on Friday, August 14.

“Trees play a vital role in maintaining the balance of nature,” said Cardinal D’Rozario, Archbishop of Dhaka.

He noted that due to population growth “forests and trees are slowly declining.”

“As a result, various natural disasters are hitting the world. In such a situation, the conscious community is emphasizing on maintaining the natural balance,” said the cardinal.

Bishop Gervas Rozario, vice president of the Bangladesh Catholic Bishops' Conference, inaugurated the "Four Lac Tree Planting Program" at Mohammadpur CBCB Center in Dhaka.

The event was attended by bishops of other dioceses as well as the leaders of Caritas in Bangladesh and in the region.
 

The program was launched to mark the Church’s Laudato si' Anniversary Year, the centenary of the birth of Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, and the Golden Jubilee of Bangladesh's Independence.

All over Bangladesh, about 4 lac Catholics are expected to plant one fruit tree each, said the religious leaders.

“I am hopeful that by uniting with the global mullahs and the country, Bangladesh Catholic mullahs will be able to contribute at least a little bit to the natural balance and development of the country,” said Cardinal D’Rozario. - Nikhil Gomes/ RVA News




মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০২০

ঢাকা আর্চডাইওসিসের ন্যায় ও শান্তি কমিশনের কোভিড -১৯ পরবর্তী নতুন স্বাভাবিক জীবন বিষয়ক সেমিনার


গত ১০ জুলাই ২০২০ খ্রিস্টাব্দে নাগরী ধর্মপল্লীতে ঢাকা আর্চডাইওসিসের ন্যায় ও শান্তি কমিশনের কোভিড -১৯ পরবর্তী নতুন স্বাভাবিক জীবন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্মপল্লীর পালকীয় পর্ষদের সদস্যগণ, ফাদার-ব্রাদার ও সিস্টারগণ, গ্রাম প্রধানগণ, ক্রেডিট ইউনিয়নের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ ৪৮জন নেতৃত্ববৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারের কর্মসূচির মধ্যে ছিল- প্রার্থনা, করোনাভাইরাস পরবর্তী আর্থ-সামাজিক অবস্থা পর্যালোচনা, নিজের প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়ক উপস্থাপনা। ধর্মপল্লীতে করোনাভাইরাস দুর্গতিতে খ্রিস্টভক্তদের আধ্যাত্মিক, সমাজিক ও নৈতিক বিষয়ে আলোচনা করেন পালক-পুরোহিত ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ, কোভিড- ১৯ পরবর্তী আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও করণীয় বিষয়সমূহ উপস্থাপন করেন ওর্য়াড ভিশন এশিয়া প্যাসিফিক কার্যক্রম সমন্বয়কারী মি. চন্দর জেড. গমেজ এবং মাণ্ডলিক ও পোপ ফ্রান্সিস এর নির্দেশনাসমূহ আলোকপাত করেন ন্যায় ও শান্তি কমিশনের সেক্রেটারি ফা. লিটন এইচ গমেজ সিএসসি। সেমিনারের শুরুতে সৃষ্টিকর্তার নিকট সৃষ্টির অসংখ্য দানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ও নিজেদের প্রতি আরও যত্নবান হওয়ার জন্য প্রার্থনা করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারী শিখিয়েছে জীবন ও পরিবেশের প্রতি আমাদের আরও বেশি যত্নবান ও রক্ষণাবেক্ষণ মনোভাব প্রয়োজন। এই অবরুদ্ধ সময় আমাদের অন্তরে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে শিখিয়েছে- আবর্জনা এখানে-সেখানে ছুড়ে ফেলে অপরিচ্ছন্ন-অস্বাস্থ্যকর নর্দমা তৈরি করেছি; গাছ কেটেছি কিন্তু রোপনে অবহেলা করে পরিবেশে ভারসাম্য নষ্ট করেছি; স্বার্থপর ও অতিভোগের কারণে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, পানিদূষণ করে ফেলেছি; প্রতিনিয়ত প্রচুর পানি অপচয় করছি, খাল-নদীর জল বিষাক্ত করে ফেলেছি; এভাবে প্রকৃতি ও প্রতিবেশীদের প্রতি অনেক ক্ষতি  ইতোমধ্যে করেছি। এসব স্মরণ করে অনুতপ্ত হই ও মন-পরিবর্তন করে প্রকৃতি ও  প্রতিবেশীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলি। অবরুদ্ধ সময়ে ধর্মপল্লীর খ্রিস্টভক্তগণ যেমন আধ্যাত্মিক একাত্মতার অভিজ্ঞতা করেছেন তা অন্তরে জাগ্রত রাখা খুবই অপরিহার্য। 


বক্তাদের উপস্থাপনা ও উন্মুক্ত আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ ছিল- এসময়ে খ্রিস্টভক্তগণ পরিবারে সকলে একত্রে আছেন। তাই দায়িত্বশীল পরিবার গঠন, সুন্দর জীবনযাপন, স্বামী-স্ত্রীর অঙ্গিকার রক্ষা, বিপদাপন্ন আপনজনদের সেবাযতœ করে পারিবারিক পরিবেশ সুন্দর করে তুলতে পারি। পরিবারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপ- প্রয়োজন মাফিক কেনাকাটা, পরিমিত রান্না ও অপচয়রোধ, পরিমিত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস, জিনিসপত্র পুনঃব্যবহার করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহযোগিতা করতে পারি। বাড়িতে বিদ্যুৎ, গ্যাস, টেলিভিশন, পানির কল, বৈদ্যুতিক পাখা ব্যবহারের পর বন্ধ রাখাতে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে। রান্নাঘরের অবশিষ্টাংশ, পাতা-লতা ও আবর্জনাগুলি মিশ্রিত করে উত্তম সার তৈরি করা যায় এবং এসব গাছের বৃদ্ধিতে আরও ভাল সার হিসেবে সহায়তা করে। পরিবার বেঁচে থাকার অপরিহার্য উপকরণসমূহ প্রকৃতি সরবরাহ করে থাকে। গবাদিপশুর প্রতি যতœবান হই, খালি জায়গায় শাক-সবজি-ফুল বাগান তৈরি করি ও রক্ষণাবেক্ষণ করি এবং ছেলেমেয়েদের যেন একইভাবে কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করি। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পানীয় জলের চরম সংকট রয়েছে, তাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা  স্নানে কম পানি ব্যবহার করতে পারি, হাতমুখ ধোয়ার সময় কলের পানি নষ্ট না করি, যতটুকু পান করতে চাই ততটুকু পানি গ্লাসে ঢেলে পান করতে পারি। আমাদের এমন ক্ষুদ্র ক্ষ্রদ্র অভ্যাস অপচয় অনেক হ্রাস করবে ও আর্থিক সহায়তা দিবে। ক্রেডিট ইউনিয়নের নেতানেত্রীগণ যেন আরো সক্রিয় ও বিচক্ষণতার সাথে করোনাভাইরাস দুর্গতির সময়ে সদস্যদের সহযোগিতা করতে পারে এ বিষয়েও আলোচনা করা হয়। একটি মানবিক পরিবেশ রক্ষার জন্য পরস্পরের প্রতি আচার-আচরণে শিষ্টাচার অনুসরণ, দলীয়করণ মনোভাব ও অযাচিত তোষামোদপ্রিয় স্বভাব, অতিভোগ ও নিয়ন্ত্রণহীন উৎসব সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারী শিখিয়েছে জীবন ও প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি আরও বেশি যত্নবান ও রক্ষণাবেক্ষণ মনোভাব প্রয়োজন। ব্যক্তিগতভাবে, পারিবারিকভাবে, ধর্মপল্লীভিত্তিক এবং কর্মস্থলভিত্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ মহান কিছু অর্জন সম্ভব হবে। পরিশেষে পাল-পুরোহিত ফা. জয়ন্ত এস গমেজ অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে সেমিনার সমাপ্ত ঘোষণা করেন।