সোমবার, ৮ জুন, ২০২০

প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের ৬টি প্রধান কারণ


পোপ মহোদয় অভিন্ন বসতবাটির ক্রমবর্ধমান পরিবেশ বিপর্যয়ের মূল ৬টি কারণ উল্লেখ করেছেন। নিম্নে সংক্ষেপে তুলে ধরা হল-
১. নীতিবোধহীন প্রযুক্তি:  প্রযুক্তির বিস্ময়কর কলাকৌশল আমাদের যদিও টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে তবে সুগভীর নীতেবোধ, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক শক্তি ছাড়া এসব জ্ঞান ও অর্থনৈতিক সম্পদসমূহ মানুষ ও মানবতার উপর আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছে;

২. সর্বাধিক মুনাফা অর্জনে প্রযুক্তিবিদ্যাকেন্দ্রিক মানসিকতা:  শুধু সর্বাধিক মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশায় সব ধরনের প্রযুক্তির অগ্রগতির মানসিকতা সৃষ্টি হয়েছে; শুধু জন্মহার হ্রাস করার চিন্তায় ব্যস্ত কিন্তু অতি উৎপাদন ও অতি ভোগ মানসিকতা কিন্তু সমন্বিত মানব উন্নয়ন ও সামাজিক অন্তর্ভূক্তিকরণে নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে পারছে না;

৩. আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ অনুশীলন: শুধুই নিজের ভোগবাসনা চরিতার্থ করার আত্মকেন্দ্রিক সংস্কৃতি চর্চা করছি; একজন গরীব মানুষ, একটি মানব-ভ্রুন, একজন প্রতিবন্ধী মানুষকে বাস্তবতার অংশ হিসেবে স্বীকার করতে কষ্ট হয়, প্রকৃতির আর্তনাদ শুনতে আমরা অপারগ; পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব ছেড়ে নিজেকে ঈশ্বরের স্থানে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে;

৪. বেসামাল ভোগবাসনা ও অতি ব্যবহারিক মনোভাব: প্রকৃতি ও সমাজকে এমনটি দুর্বল মানুষকে নিজের স্বার্থে কেবল বস্তু সমাগ্রীর হিসেবে ব্যবহার করা, বলপূর্বক শ্রমের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া, ঋণ পরিশোধ না-কার পর্যন্ত ক্রীতদাস হিসেবে খাটানো, শিশুদের যৌন-সম্ভোগে ব্যবহার, বিপদাপন্ন প্রবীনদের পরিত্যাগ করা এবং সুবিধার জন্য ‘ব্যবহার-কর এবং ছঁড়ে-ফেলে-দাও’ মানসিকতা লালন করা হচ্ছে;

৫. প্রযুক্তি ক্রমান্বয়ে মানবিক কর্মের স্থান দখল: সকল বেকার মানুষ কাজের সুযোগ পাবে এমন মনোভাব হ্রাস পাচ্ছে বরং মানুষকে বাদ দিয়ে শুধু প্রযুক্তি ব্যবহার করার মানসিকতা বৃদ্ধি, তা মানবতার জন্য ক্ষতিকর; এবং

৬. নতুন জৈব প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব: 'বংশগতি পরিবর্তন ও সংকর প্রজনন' কিছু অথনৈতিক উন্নয়র হলেও এর ব্যবহারে উর্বর জমি সীমিত সংখ্যক মালিকের হাতে চলে গেছে ফলে স্বল্পপরিমাণ উৎপাদকদের সংখ্যা অতিমাত্রায় কমে গেছে, অনেকে জমি হারিয়েছে ফলে খন্ডকালীন মজুরে পরিণত হয়েছে, গ্রামীণ মজুর দারিদ্র্যপীড়িত শহরে বস্তিবাসী হয়েছে, পরিবেশ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, উৎপাদন বৈচিত্র্যের বিলুপ্তি হয়েছে যা জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন