সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

১০৬তম বিশ্ব অভিবাসী ও শরণার্থী দিবস : রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ

 


ঢাকা/চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশ - বরিশাল/দিনাজপুর/খুলনা/ময়মনসিংহ/রাজশাহী/সিলেট ধর্মপ্রদেশ

বিষয়: "১০৬তম বিশ্ব অভিবাসী ও শরণার্থী দিবস" (২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ) উদযাপন  

             প্রসঙ্গে।

শ্রদ্ধেয় ফাদার, ব্রাদার, সিস্টার ও খ্রিস্টিয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ,

ন্যায় ও শান্তি কমিশন-সিবিসিবি’র পক্ষ হতে শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন! পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস গৃহহারা অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষদের যারা সুরক্ষা, উন্নয়ন ও সংগঠিত করছেন তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং আগামী রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, "১০৬তম বিশ্ব অভিবাসী ও শরণার্থী দিবস" উদযাপনের জন্য বিশ^বাসীর প্রতি আহ্বান রেখেছেন। 

পোপ মহোদয় এ বছর অভ্যন্তরীণ অভিবাসী ও বাস্তুচ্যুত জনগণের পালকীয় সেবাযতেœর উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং মূল প্রতিপাদ্য বিষয়  হিসেবে ঘোষণা করেছেন, "যিশু খ্রিস্টের মতোই পালাতে বাধ্য" (“Like Jesus Christ, Forced to flee”)। পোপ মহোদয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রার্থনা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পালকীয় কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটি অর্থপূর্ণ করতে পারি। ফলে অভিবাসী ভাইবোনেরা বিশেষভাবে করোনামহামারীর সময়ে গরিব, দুঃস্থ, অবহেলিত, নানাধরনের ঝুঁকি ও বিপদাপন্ন অবস্থায় পতিতদের আশ্রয়, সুরক্ষা, উন্নয়ন ও স্থানীয় সমাজে (হোস্ট কমিউনিটি) একত্রে মর্যাদাসহ জীবনযাপন করতে পারবে। 

১. পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস-এর সংক্ষিপ্ত বাণী নিজেরা পাঠ ও অনুধ্যান করে তাঁর মতো হৃদয় নিয়ে অভিবাসী ভাইবোনেরা যারা আমাদের জন্য কাজ করে অথবা বসবাস করে তাদের এবং আমাদের আশেপাশে বসবাসরত অভিবাসী ভাইবোনদের প্রতি আরও শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাপূর্ণ মানবীয় আচরণ করতে পারি। আমাদের দেশ থেকে যারা বিভিন্ন দেশে কাজ, পড়াশুনা বা জীবনযাপনের জন্য অবস্থান করছে তাদেরও স্মরণ করতে পারি।

২. পোপ মহোদয়ের বাণীর আলোকে শিক্ষা ও সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ অভিবাসী ও বাস্তুচ্যুত জনগণের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজনে পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারি। অভিবাসী ভাই-বোনদের অবস্থা জানা, বোঝা ও অনুধাবনের জন্য আলোচনা, সংলাপ ও ক্ষুদ্র দলে বৈঠক আয়োজন করা যেতে পারে। প্রয়োজনে সাপ্তাহিক প্রতিবেশি’র বিশেষ সংখ্যা : বিশ্ব অভিবাসী ও শরণার্থী দিবস (২০-২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ) সংখ্যাটি থেকে সাহায্য নিতে পারি।

৩. বরিবারের খ্রিস্টযাগে (২৭ সেপ্টেম্বর) পুরোহিতগণ অনুধ্যান ও উপদেশে পোপ মহোদয়ের বাণী এবং মথি রচিত মঙ্গলসমাচার ২:১৩-২৩ পদ সহভাগিতা করতে পারেন। খ্রিস্টযাগের সময়, কনভেন্টের প্রার্থনায়, প্রতিষ্ঠানে অফিসের কার্যক্রম শুরুর আগে অভিবাসী ভাইবোনদের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করতে পারি। ধর্মপল্লীর পালকীয় কাজে অভিবাসী ভাইবোনদের সম্পৃক্ত করতে ও তাদের প্রয়োজনে সাড়াদান করতে পারি। 

৪. স্থানীয় ও অভিবাসী ছেলেমেয়েদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করে একত্রে পড়াশোনা, খেলাধুলা ও একত্রে বেড়ে উঠার পরিবেশ তৈরি করতে পারি। স্থানীয় সমাজের উন্নয়নে অভিবাসী ভাইবোনদের অবদান অনুধাবন করা, স্বীকৃতি দেয়া এবং তাদেরকে স্থানীয় সমাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিভিন্ন কাঠামোতে সাধ্যমতো অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা যাতে তারা আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে। ক্রেডিট ইউনিয়নে অভিবাসী ভাইবোনদের অংশগ্রহণ ও আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে পারি।

আমাদের প্রতিটি ধর্মপল্লীতেই অনেক অভিবাসী ভাইবোন আছে যারা প্রতিদিন আমাদের জীবন বাঁচাতে ও জীবন সাজাতে নানাভাবে ভূমিকা রাখছে। যেমন- গৃহ পরিচারিকা, ড্রাইভার, দারোয়ান, দিন-মজুর, বাড়ি-ঘর ও কৃষিজমি রক্ষণাবেক্ষণকারী, সেলুন বা পার্লারে কর্মরত, রিকশাচালক আরও অনেকভাবে সহায়তা করছে। আমাদের জীবনে তাদের অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই ও তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সাধ্যমতো চেষ্টা করি এবং বিপদ-আপদে সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে অঙ্গীকার করি।

আমাদের বিশ্বাস ও আশা, দয়ার কাজের মাধ্যমে একই পিতার সন্তান হিসেবে সকলে পরস্পর ভাই-বোন হিসেবে জীবনযাপন করতে পারব ও একত্রে মিলে সমাজে আরও সক্রিয় হতে উঠতে পারবো।

পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ডিডি, সভাপতি, সিবিসিবি ন্যায় ও শান্তি কমিশন, এর পক্ষে পত্রটি প্রেরণ করছি।

খ্রিস্টেতে,

ফা. লিটন হিউবার্ট গমেজ, সিএসসি জ্যোতি গমেজ

সচিব, ন্যায় ও শান্তি কমিশন, সিবিসিবি প্রধান সমন্বয়কারী, অভিবাসী বিষয়ক দপ্তর




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন