বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০

করোনাভাইরাস মহামারী সময়েও দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা

 দেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ মাইনোরিটি ওয়াচ ও গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর সাত মাসের ‘সাম্প্রদায়িক চালচিত্র’ তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয়, এই সময়ে দেশে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ১৭ জন হত্যা, ১০ জন হত্যাচেষ্টার, ১১ জনকে হত্যার হুমকির, ৩০ জন ধর্ষণ-গণধর্ষণ ও নির্যাতন, ছয় জন ধর্ষণচেষ্টা, তিনজন শ্লীলতাহানির কারণে আত্মহত্যা, ২৩ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন।

পাশাপাশি ২৭টি প্রতিমা ভাঙচুর, ২৩টি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ, ২৬টি বসতবাড়ি, জমি ও শ্মশান উচ্ছেদের ঘটনা, পাঁচটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দখলের ঘটনা, ৭৩টি উচ্ছেদ চেষ্টা, ৩৪ জনকে দেশত্যাগের হুমকি, ৬০টি পরিবারকে গ্রামছাড়া করা, চারজনকে ধর্মান্তরিত হতে হুমকি, সাতজনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণ, ৮৮টি বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট, ২৪৭ জনকে দৈহিক হামলা, ২০টি পরিবারকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ বিতরণকালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আহ্বান জানানো এবং মহানবীকে কটূক্তির মিথ্যা অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে।

রাণা দাশগুপ্ত বলেন, এসব সন্ত্রাসের কোনো-কোনোটির সাথে সন্ত্রাসীরা সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীর পরিচয় দিয়েছে। এই চালচিত্র সম্পূর্ণ চিত্র নয়, সমগ্র ঘটনার আংশিক মাত্র। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাংলাদেশে নিত্যদিনের স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ভীত করে দেশত্যাগে বাধ্য করা যাতে দেশটি সংখ্যালঘু শূন্য হয়ে পড়ে।

ধর্ম অবমাননার জিগির তুলে দিনাজপুর, পার্বতীপুর ও কুমিল্লার মুরাদনগরে সংখ্যালঘু এলাকায় আক্রমণ-অগ্নিসংযোগ নারী নির্যাতন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলের অপপ্রয়াসের প্রতিবাদে ও গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে, অধ্যাপক কুশল চক্রবর্তীকে হত্যার হুমকি, ধর্মপ্রাণ শহিদুন্নবী জুয়েলকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে এবং সংখ্যালঘুর সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এই আট দাবি পরিষদের।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতা চন্দন বিশ্বাস, বরুণ কান্তি চৌধুরী, প্রদীপ চৌধুরী, দোলন মজুমদার, সুভাষ দাশ, অসীম দেব, হরিপদ চক্রবর্তী, অশোক চক্রবর্তী, স্বরুপ পাল ও রুবেল পাল উপস্থিত ছিলেন।



তথ্যসূত্র: চট্টগ্রাম ব্যুরো, ৩ নভেম্বর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ,  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন